নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের এখলাশপুরে মদিনাতুল উলুম মাদরাসা ও কমপ্লেক্সে রাতের খাবার খেয়ে বিষক্রিয়ায় এক মাদরাসাছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অসুস্থ হয়ে আরও ১৭ জন ছাত্র নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই এক ছাত্রের মৃত্যু হয়।
নিহত নিশান নুর হাদী (৯) উপজেলার ৭ নম্বর একলাশপুর ইউনিয়নের পূর্ব একলাশপুর গ্রামের আনোয়ার মিয়ার ছেলে। সে মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসা ও এতিম খানার নূরানী বিভাগের প্রথম ছাত্র ছিল। গতকাল সোমবার রাতের খাবার খেয়ে একলাশপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব একলাশপুর গ্রামের ওই মাদরাসায় ও এতিম খানার রাতের খাবারের খাদ্যে বিষক্রিয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
মারা যায় নিশান নুর হাদী
মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসা ও এতিম খানার সুপারিনটেনডেন্ট ইসমাইল হোসেন জানান, সোমবার দুপুরের দিকে মাদরাসায় মাংস রান্না হয়। এরপর একই দিন এশার নামাজের পরে মাদরাসার আবাসিক বিভাগের ২০ জন ছাত্র ওই মাংস দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যায়। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ১৮ জন ছাত্র অসুস্থ হয়ে সবাই পেট ব্যাথায় বমি করতে থাকে। এ সময় মাদারাসার একজন আবাসিক শিক্ষক বিষয়টি অবহিত করেন এবং একজন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসককে মাদরাসায় ডেকে আনেন। পরবর্তীতে পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে অসুস্থ ১৮ জন ছাত্রকে কয়েক ধাপে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী ১২০ জন। প্রথম ধাপে ১৮ জন রাতের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে বাকি ওই খাবার আর কেউ খায়নি। এ মাদরাসায় মোট ৭০ জন শিক্ষার্থী দৈনিক খাবার খায়। অসুস্থদের বরাত দিয়ে স্থানীয়রা জানান, মাংসে একটু দুর্গন্ধ ছিল। অসুস্থদের মধ্যে নিশান মাদরাসাতেই মারা যায়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা.সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রাতের খাবার খেয়ে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় (ফুড পয়জনিং) মাদরাসার ছাত্ররা অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থদের মধ্যে নিশান নামে এক মাদরাসার ছাত্রকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। এছাড়া আরও ১৭ জন মাদরাসাছাত্র অসুস্থ অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে পারভেজ হোসেন মিরাজের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাক্তার খায়রুল আনমের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সিকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। খাবারের সাথে কোনো বিষাক্ত পদার্থ মেশানো হয়েছে কিনা তা তদন্ত করতে বাকি খাবার পরীক্ষার জন্যে জব্দ করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই রকম আরো খবর