মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে ইছামতি (তালতলা খাল) নদীর ভাঙনের মুখে মসজিদ, মাদরাসা, কমিউনিটি ক্লিনিক, বাজারসহ ফুলকচি গ্রাম। এলাকাটি রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোন কাজ হয়নি। বছরের পর বছর ভাঙছে এ এলাকা। পানি উন্নয়ন বোর্ড স্থায়ী বাঁধের অজুহাতে এ এলাকায় ভাঙনরোধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় যেকোন সময় এসব স্থাপনা বিলীন হয়ে যেতে পারে ইছামতি নদীর থাবায়। আপাতত অস্থায়ী বাদ দিয়ে ভাঙনরোধ উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড তথা সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন এলাকাবাসী। সরজমিনে লৌহজংয়ে ফুলকচি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ফুলকচি দারুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানা হতে মাত্র ১০ জগ দুরে ইছামতি নদী, ২০ গজ দূরে ফুলকচি মাদরাসা মসজিদ, ৫০ গজ দূরে ফুলকচি কমিউনিটি ক্লিনিক। ইতোমধ্যে মাদরাসা ও মসজিদের বেশ কিছু জায়গা ইছামতি নদী গিলে খেয়েছে। ক্রমেই গ্রাস করে নদী এগিয়ে যাচ্ছে মাদরাসা, মসজিদ ও ক্লিনিকের দিকে। ভাঙছে গ্রাম ও ফুলকচি বাজার। ইছামতি নদীর ওই এলাকায় একটি গভীর খাদ তৈরি হয়ে সেখানে ঘুর্ণাবর্তের কারণে নদীর ভাঙন ক্রমেই গ্রামের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে গ্রামটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবার আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় খিদির পাড়া ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার শরীফ উদ্দিন জানান,ভাঙন ঠেকাতে না পারলে এ গ্রামটির গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। ফুলকচি মাদরাসা মসজিদের মোতাল্লি মো. আব্দুল রব জানান, আমাদের মাদরাসা ও মসজিদটির প্রায় ১০/১৫ গজের মধ্যে ইছামতি নদী। প্রতিদিনই ভেঙে ভেঙে মসজিদের দিকে এগিয়ে আসছে ইছামতি। সরকার যদি আমাদের না দেখে তবে এখানকার মসজিদ ও মারাসার পাকা স্থাপনাগুলো রক্ষা করা সম্ভব হবে না। লৌহজং উপজলা যুবলীগের কার্যকরী সদস্য ও ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. মাকসুদ রানা জানান, আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিক, মসজিদ, মাদরাসা, স্থানীয় বাজারসহ ফুলকচি গ্রামটি এখন হুমকির মুখে। নদী ভাঙনের আশঙ্কায় গ্রামবাসীর ঘুম অনেকটা হারাম হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ধর্ণা দিলেও তারা স্থায়ী বাঁধের কথা বলছে। অথচ এখন অস্থায়ী ভাবে এখানে বাঁশ দিয়ে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেললে আপাতত এসকল স্থাপনা রক্ষা করা যেতো। খিদিড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, এলাকাটি ইছামতি নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করে আমাদের এমপি অধ্যাপক সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি’র ডিও লেটার দিয়েছি। অথচ কোন কাজই করছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। আপাতত এখানে অস্থায়ী বাঁধ দিতে না পারলে বড় ধরণের ক্ষতি হয়ে যাবে গ্রামটির। এ ব্যাপারে পানি উন্নয় বোর্ডের ঢাকা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান, এলাকাটিতে স্থায়ী বাঁধের জন্য একটি প্রকল্প এখন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই এটি একনেকে পাশ হলে আগামী শুস্ক মৌসুমে এখানে স্থায়ী বাঁধ দেয়া হবে। তবে মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন পেলে এখানে আপদকালীন অস্থায়ী বাঁধ দেয়া যেতে পারে। আমরা এলাকাটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো। এদিকে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এলাকাটি রক্ষায় জিও ব্যাগ ভর্তি বালু ফেলে আপাতত ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হবে। এই রকম আরো খবর