লকডাউনে প&#x

লকডাউনে পরিবহন শ্রমিকদের পাশে কেউ নেই | 1057504 | কালের কণ্ঠ


করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান কঠোর লকডাউনে পরিবহন শ্রমিকদের পাশে কেউ নেই—না সরকার, না মালিক। জেলাগুলোতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শ্রমিকদের আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা হয়েছিল আগের লকডাউনে, তা-ও আটকে আছে লাল ফিতায়। ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই লকডাউনে এখন পর্যন্ত সরকার বা মালিকপক্ষ থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি। ‘আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে কিছু কিছু সহযোগিতা দিচ্ছি। কিন্তু তা অতি নগণ্য।’
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলছিলেন কথাগুলো। গত রবিবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর সায়েদাবাদ, গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনালে সরেজমিনে গিয়ে এই শ্রমিক নেতার কথার প্রমাণও মেলে।
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের পশ্চিম কোণে একাকী বসে থাকতে দেখা যায় সিডিএম পরিবহনের শ্রমিক মেহেদিকে। কেমন আছেন, জানতে চাইলে কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘চলমান লকডাউনে বাসের কাজ নেই। খোরাকিডাও পাই না। সরকার, মালিক বা পয়সাওয়ালা কোনো মানুষও এখন খাদ্য সহায়তা দেয় না। বলতে পারেন জীবনটা চলছে ভিক্ষুকের মতো।’
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ১৫-২০ জন শ্রমিকের দেখা মেলে। তাঁরা জানান, আগের লকডাউনে বাস পাহারা দিলে মালিকরা দিনে ২০০ টাকা খোরাকি দিতেন। কিন্তু এবার বাস পাহারা দেওয়ার জন্য মালিকরা কাউকে রাখেননি। দুপুরের দিকে টার্মিনালে খিচুড়ি রান্না করছিলেন ফয়সাল, সজীব, টিপু ও খালেক নামের চার শ্রমিক। তাঁরা বলেন, ‘কোথায় আর যাব? এখানেই থাকি, বাসগুলো দেখাশোনা করি। দয়াবান দু-একজন মালিক কখনো এসে ১০০-২০০ টাকা দেন তা দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খাই। বাড়ির কথা চিন্তাও করতে পারি না।’
মহাখালী টার্মিনালজুড়ে সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে আছে। কোনো শ্রমিক নেই। খোঁজাখুঁজির পর একজনকে পাওয়া গেল। সিয়াম নামের ওই শ্রমিক বলেন, ‘আমার বাড়ি নেত্রকোনায়। বাসে হেলপার হিসেবে কাজ করতাম। ঢাকায় থাকার জায়গা নেই। দিনে ঘুরিফিরি; কিছু চেয়ে খাই, রাতে টার্মিনালে ঘুমাই। আবার বাস চালু হবে, কাজ করব—সেই আশায় এখানেই পড়ে আছি।’
কাজ হারিয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পরিবহন শ্রমিক এরই মধ্যে পেশা বদল করতে বাধ্য হয়েছেন। কেউ রিকশার প্যাডেল ঘোরাচ্ছেন, কেউবা গ্রামে গিয়ে কৃষি শ্রমিকের কাজ শুরু করেছেন। অনেকে হয়েছেন দিনমজুর। মিরপুরের কালশীর বাসিন্দা মহিদুল একসময় রিকশাচালক ছিলেন। দুই বছর আগে বাসের হেলপারের কাজ শুরু করেন। লকডাউনে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন আবার রাতের বেলায় রিকশা চালাচ্ছেন। সায়েদাবাদের বাস শ্রমিক ইমতিয়াজ মোবাইল ফোনে জানালেন, নরসিংদীতে গ্রামে ফিরে গিয়ে তিনি দিনমজুর হিসেবে ক্ষেতে কাজ করছেন।
গাবতলী টার্মিনালের চিত্রও একই। এবার লকডাউনে বাস পাহারা দেওয়ার জন্য শ্রমিক রাখেনি মালিকপক্ষ। টার্মিনালের পাহারাদাররাই বাস পাহারা দেয়। সাইদুল, রবিউল ও কাইয়ূম নামের তিন শ্রমিককে টার্মিনালের গেটে বসে থাকতে দেখা গেল। সাইদুল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আগের লকডাউনে বাস পাহারা দিয়ে কিছু খোরাকি মিলত, তা দিয়ে সংসার চলত। এবার তাও নেই। আবার ঢাকা সিটিতে বাস চালু থাকার সময়ে মাইক্রোবাসে যাত্রী জোগাড় করে দিলে কিছু আয় হতো। এখন সেটাও নেই।’
ঢাকা সিটিতে চলাচলকারী প্রজাপতি পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘করোনার প্রায় দুই বছরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গণপরিবহন খাত। ঢাকায় যেসব বাস চলে সেগুলোর মালিকরা সবাই বিত্তবান নন। একটি বা দুটি বাসের আয় দিয়েই তাঁদের সংসার চলে। এমন মালিকের সংখ্যাই বেশি। এখন তাঁরা নিজেরাই দুরবস্থায় আছেন। এ অবস্থায় তাঁরা শ্রমিকদের দিকে কিভাবে তাকাবেন! তার পরও আজ (গতকাল) আমাদের একটি বৈঠক আছে। দেখি সেখানে কী সিদ্ধান্ত হয়।’
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতউল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মালিকরাও দুর্দশায় আছেন। দিনের পর দিন বাস বন্ধ। তার পরও বিগত লকডাউনগুলোতে আমি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে, আবার কখনো মালিকদের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। এবারও দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এই রকম আরো খবর

Related Keywords

Mirpur , Punjab , Pakistan , Multan , Narsingdi , Dhaka , Bangladesh , Rafiqul Islam , Osman Ali , , District Administrator , Bangladesh Road Transport , Editor Osman Ali , Multan Bus Terminal , Bus Terminal West Corner , Food Support , Bus Terminal John , Place Not , Badam Terminal , Terminal Bus , Tao Not , State They , மிற்புர் , பஞ்சாப் , பாக்கிஸ்தான் , முல்தான் , டாக்கா , பங்களாதேஷ் , ரஃபைக்யுல் இஸ்லாம் , ஆஸ்மந் அலி , பங்களாதேஷ் சாலை போக்குவரத்து , உணவு ஆதரவு , முனையத்தில் பேருந்து , நிலை அவர்கள் ,

© 2025 Vimarsana