Pegasus incident is a vivid example of attack on freedom of

Pegasus incident is a vivid example of attack on freedom of expression during Narendra Modi's regime


Anandabazar
সিঁধ কাটিবার আইন
২১ জুলাই ২০২১ ০৫:২০
প্রতীকী চিত্র।
আইন আইনের পথে চলিবে— ভাল। কিন্তু আইনের পথ যদি ব্যক্তিগত বা সামাজিক পরিসরের নিভৃত এলাকাতেও সুড়ঙ্গ খুঁড়িয়া বা সিঁধ কাটিয়া ঢুকিয়া পড়িতে চাহে? রাজনীতিক, সাংবাদিক, সমাজকর্মী ইত্যাদি বিবিধ গোত্রের বহু নাগরিকের ফোনে বা কম্পিউটারে নজরদারি করিবার তথা আড়ি পাতিবার নূতন অভিযোগের জবাবে কেন্দ্রীয় সরকারি বলিয়াছে, আইন লঙ্ঘন করিয়া কিছুই করা হয় নাই। সরকারের ভাষ্য হইতে সত্য প্রায়শই কয়েক যোজন দূরে থাকে, নরেন্দ্র মোদীর জমানায় সেই দূরত্ব হয়তো-বা আলোকবর্ষে মাপা বিধেয়। কিন্তু তাহার আগে একটি মৌলিক নীতির কথা বলা জরুরি। ‘জাতীয় নিরাপত্তা’র প্রয়োজনে বা ‘জনজীবনের সুস্থিতি’ রক্ষার স্বার্থে এই ধরনের গোপন নজরদারির অনুমোদন যে আইনে থাকে, ক্ষমতাবানের হাতে অপপ্রয়োগের আশঙ্কা স্বভাবত প্রবল। এই কারণেই ষাটের দশক হইতেই নজরদারির আইন ও তাহার প্রয়োগকে সংযত করিবার দাবিতে আদালতে একের পর এক মামলা হইয়াছে, সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিসরে গণতান্ত্রিক চাপসৃষ্টির ফলে আইন বারংবার সংশোধিত হইয়াছে। বিশেষত কাহারও উপর নজরদারির অনুমতি দিবার অধিকার কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের অতি উচ্চ স্তরের এক্তিয়ারেই সীমিত রাখা হইয়াছে। সেই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা পর্যালোচনার ব্যবস্থাও আইনে আছে।
কিন্তু, রক্ষকই যদি ভক্ষক হয়? নাগরিকের ফোনে আড়ি পাতিবার অনুমোদন দিবার অধিকারটিকে রাষ্ট্রযন্ত্রের অতি উচ্চ স্তরের চালকরা যদি নিজেদের রাজনৈতিক আধিপত্য জোরদার করিবার স্বার্থে ব্যবহার করিতে তৎপর হন, তবে তো আইনি রক্ষাকবচই বিরোধী-নিধনের হাতিয়ারে পর্যবসিত হয়! আড়ি পাতিবার সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিরোধীরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করিতেছেন, তাহার কারণ— স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকই নজরদারির অনুমতি দিবার অধিকারী। অমিত শাহ চালিত সেই মন্ত্রক তথা নরেন্দ্র মোদী চালিত সরকার সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলিয়া উড়াইয়া দিলেও তাহা উড়িবার নহে। প্রথমত, যাঁহাদের উপর গোপন নজরদারির অভিযোগ, তাঁহারা কেন্দ্রীয় শাসকদের সমালোচক, অনেকেই সরকারের নির্দিষ্ট অপরাধ বা অন্যায়ের প্রতিবাদী। তাঁহাদের কেহ কেহ শাসক তথা ক্ষমতাবানদের বিরুদ্ধে মুখ খুলিবার বা সক্রিয় হইবার অব্যবহিত পরেই নাকি তাঁহাদের ফোনে আড়ি পাতা শুরু হইয়াছে। কাকতালীয় ঘটনা নিশ্চয়ই ঘটে, কিন্তু কেবলই কাকেরা তালগাছে বসিতেছে আর তাল পড়িতেছে?
দ্বিতীয়ত, আড়ি পাতিবার এই অভিযোগ নিরালম্ব বায়ুভূত নহে। এক দিকে রহিয়াছে এহেন গোপন নজরদারির দীর্ঘ ইতিহাস, ইউপিএ জমানাতেও যাহার কলঙ্কিত অধ্যায় রচিত হয়। কিন্তু অন্য দিকে আছে বর্তমান কেন্দ্রীয় শাসকদের নিরাবরণ আধিপত্যবাদের সর্বগ্রাসী আক্রমণের অ-পূর্ব অভিজ্ঞতা। বিরোধী রাজনীতিক, প্রতিবাদী সমাজকর্মী, স্বাধীনচেতা প্রশ্নবাচী সাংবাদিক— গণতন্ত্রের সব কণ্ঠস্বর দমন করিয়া একাধিপত্য কায়েম করিতে যাঁহারা অহোরাত্র তৎপর, তাঁহাদের জমানায় এহেন নজরদারির অভিযোগের বাড়তি তাৎপর্য অনস্বীকার্য। লক্ষণীয়, দুনিয়া জুড়িয়া একাধিপত্যবাদী শাসকের আক্রমণে উদার গণতন্ত্র যখন বিপন্ন, সেই সময়েই বিরোধীদের উপর গোপন নজরদারির অজস্র অভিযোগ উন্মোচিত হইতেছে। আধুনিক প্রযুক্তি সেই অন্যায়ের সুযোগ করিয়া দিয়াছে। প্রযুক্তির কারবারিদের সহিত রাষ্ট্রশক্তির আঁতাঁত বিপদ বহুগুণ বাড়াইয়া তুলিয়াছে— ইজরায়েল, এনএসও এবং পেগাসাস প্রমাণ। বিপদ ব্যক্তিস্বাধীনতার, বিপদ মুক্ত সমাজের, বিপদ উদার গণতন্ত্রের। এই বিপদের মোকাবিলায় দুনিয়ায় গণতান্ত্রিক ভারতের নেতৃত্ব দিবার কথা ছিল। দুর্ভাগ্য, পরিবর্তে, মোদীর ভারতের স্থান হইয়াছে কাঠগড়ায়।
Advertisement

Related Keywords

India , Israel , Amit Shah , Narendra Modi , , Law Act , Narendra Modi Under , Democratic India , Modi India , இந்தியா , இஸ்ரேல் , அமித் ஷா , நரேந்திர மோடி , சட்டம் நாடகம் , ஜனநாயக இந்தியா , மோடி இந்தியா ,

© 2025 Vimarsana