এসএমই অর্&#x

এসএমই অর্থনীতির প্রাণ


এসএমই অর্থনীতির প্রাণ
সাক্ষাৎকার : এসএমই ফাউন্ডেশন এমডি
এসএমই অর্থনীতির প্রাণ
মনির হোসেন
  যুগান্তর ডেস্ক  
২৫ জুন ২০২১, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ
দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই)। মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) এ খাতের অবদান ২৫ শতাংশ। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের তালিকায় নিতে হলে এসএমই খাতের বিকল্প নেই। সামগ্রিক মূল্যায়নে এসএমই অর্থনীতির প্রাণ। ২৭ জুন আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস উপলক্ষ্যে যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. মফিজুর রহমান এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মনির হোসেন।
যুগান্তর : দেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের ভূমিকা কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
মফিজুর রহমান : বিশ্বের সব দেশেরই অর্থনীতির মেরুদণ্ড হচ্ছে এসএমই। দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৯০ শতাংশই এ খাতের অবদান। আগামী দিনে দেশকে উন্নত করতে হলে এসএমইর বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে শুধু প্রণোদনা নয়, এ খাতকে নিয়ে মহাপরিকল্পনা নিতে হবে।
যুগান্তর : এসএমই ফাউন্ডেশন কী ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে?
মফিজুর রহমান: ২০০৭ সালে শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এসএমই ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে সরকার। এসএমই নীতিমালা-২০১৯ ও শিল্পনীতি-২০১৬ আলোকে সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে এটি কাজ করছে। এসএমইবান্ধব ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টি এবং উদ্যোক্তা উন্নয়নে গবেষণা ও পলিসি অ্যাডভোকেসি, এসএমই ক্লাস্টার উন্নয়ন, প্রযুক্তি, আইসিটি, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন, অ্যাকসেস টু ফিন্যান্সসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করছে। এ পর্যন্ত সারা দেশে ১৭৭টি এসএমই ক্লাস্টার চিহ্নিত করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে ৭৫টির উন্নয়ন চাহিদা নিরূপণ করা হয়েছে। এর ভিত্তিতে ক্লাস্টারভিত্তিক উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, স্বল্প সুদে অর্থায়ন, উদ্যোক্তা উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া উন্নয়নের মূল স্রোতোধারায় নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে আসা এবং তাদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিতের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন তাদের জন্য পৃথক কর্মসূচি পরিচালনা করে যাচ্ছে।
যুগান্তর : আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস নিয়ে কী পরিকল্পনা রয়েছে?
মফিজুর রহমান : শোভন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এমএসএমই) খাতকে আরও এগিয়ে নিতে ২০১৭ সালে জাতিসংঘ ২৭ জুনকে ‘এমএসএমই দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করে। এ বছর সারা বিশ্বে পঞ্চমবারের মতো দিবসটি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশে এসএমই ফাউন্ডেশন প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে নানা আয়োজনে ‘এমএসএমই দিবস’ উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ উপলক্ষ্যে জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারণা এবং নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
যুগান্তর : করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত এই খাত পুনরুদ্ধারে কী ভাবছেন?
মফিজুর রহমান : করোনা পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছি। সরকারের দ্বিতীয় দফার প্রণোদনার আওতায় মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তাদের মধ্যে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের কাজ চলছে। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা এবং আগামী অর্থবছরে ২০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে। এ লক্ষ্যে ১১টি ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।
যুগান্তর : উদ্যোক্তাদের পণ্য বাজারজাতকরণে কী উদ্যোগ নিয়েছেন?
মফিজুর রহমান : উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত সম্পূর্ণ দেশীয় পণ্য নিয়ে ফাউন্ডেশন জাতীয় ও আঞ্চলিক এসএমই পণ্যমেলা আয়োজন করে। এ পর্যন্ত ৮টি জাতীয় এসএমই পণ্যমেলায় ১ হাজার ৫৬১ জন উদ্যোক্তা প্রায় ২১ কোটি ৮৮ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি এবং ৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার অর্ডার পেয়েছে। ৮৬টি আঞ্চলিক (বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে) মেলায় ৩ হাজার ১৬২ জন উদ্যোক্তা ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার পণ্য বিক্রয় এবং ২১ কোটি ১৪ লাখ টাকার অর্ডার পেয়েছেন। ২০০৮ সাল থেকে ৩৮ জন উদ্যোক্তাকে এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ২৫ নারী, ১২ পুরুষ এবং একজন তৃতীয় লিঙ্গের উদ্যোক্তা। ১২৭ জন উদ্যোক্তাকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাসহ দেশে-বিদেশে (জার্মানি, জাপান, ভারত, চীন, কাতার) মেলায় অংশ নেওয়ায় সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
যুগান্তর : নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ কোনো কর্মসূচি আছে?
মফিজুর রহমান : নারী উদ্যোক্তাদের জন্য পৃথক উইংয়ের মাধ্যমে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং তাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ২৫০টি বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় ৭ হাজার ২৫০ জন নারীকে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশব্যাপী ব্যবসা ব্যবস্থাপনা, পণ্য বহুমুখীকরণ এবং নেটওয়ার্ক বাড়াতে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় ৫ হাজার নারী-উদ্যোক্তা উপকৃত হয়েছেন। নারী আইসিটি ফ্রিল্যান্সার এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচি’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৬৪ জেলায় ৩ হাজার নারী-আইসিটি উদ্যোক্তা তৈরি করা হয়েছে। রপ্তানি বাণিজ্যে তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে কানাডার ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অফিসের সঙ্গে পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
যুগান্তর : উদ্যোক্তা তৈরি ও দক্ষতা উন্নয়নে কী উদ্যোগ নিয়েছেন?
মফিজুর রহমান : নতুন উদ্যোক্তা ও স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের সহায়তায় ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি বিজনেস ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। নতুন উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে ১ হাজার ৪০টি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় ৩১ হাজার ২২০ জনকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এদের ৬০ শতাংশই নারী। উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের সম্প্রতি একটি স্বতন্ত্র এসএমই ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
যুগান্তর : এ খাতে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
মফিজুর রহমান : এসএমই খাতের বিকাশে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছি আমরা। ইতোমধ্যে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স, হালকা প্রকৌশল, প্লাস্টিক, চামড়া, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, ফ্যাশন ডিজাইনিং, সফটওয়্যার ও ফার্নিচার খাতের ওপর ৮টি গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে। পণ্যের প্রচারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এসএমই ফাউন্ডেশন কাজ করছে। বুলগেরিয়া, তুরস্ক ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে এসএমই উদ্যোক্তা উন্নয়নে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারক সই করা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরেও এসএমই খাতের উন্নয়নে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছি। পাঁচ বছর মেয়াদি (২০২১-২৫) কৌশলগত উন্নয়ন রূপকল্প তৈরি, সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ২০০ কোটি টাকা বিতরণ, একটি জাতীয় এবং বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে ১৬টি আঞ্চলিক এসএমই পণ্যমেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সম্পাদক :
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬ 
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Related Keywords

Germany , Qatar , Japan , Bangladesh , India , China , Bulgaria , Canada , South Korea , Turkey , , Smes Foundation , National Smes , International Day , Nationale Category , Smes Training Centre , Bangladesh Smes Foundation , Foundation National , Bangladesh Advanced , June International Day , Mofizur Baby , Moni Hussain , Introduction How , Country Advanced , For Special , Special Training , Term Project , Training Centre , Flight Engineering , ஜெர்மனி , கத்தார் , ஜப்பான் , பங்களாதேஷ் , இந்தியா , சீனா , பல்கேரியா , கனடா , தெற்கு கொரியா , வான்கோழி , தேசிய ஸ்மெஸ் , சர்வதேச நாள் , அடித்தளம் தேசிய , க்கு சிறப்பு , சிறப்பு பயிற்சி , கால ப்ராஜெக்ட் , பயிற்சி மையம் , ஒளி பொறியியல் ,

© 2025 Vimarsana