স্বপ্ন দেখেন বিশ্ব জয়ের জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের ক্রিকেটার জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনা মোশারফ হোসাইন০৩:২৯, ৩১ জুলাই, ২০২১ | পাঠের সময় : ২ মিনিট 'ইচ্ছাশক্তি, চেষ্টা ও আত্মবিশ্বাস থাকলে সফল হওয়া সম্ভব। অন্যান্য প্রমীলা ক্রিকেটারদের বেশ বাঁধাবিপত্তি পেরোতে হলেও আমার নিরবচ্ছিন্ন ভাবেই ক্রিকেটে আসা হয়। ছোটবেলায় ভালো লাগার অন্যতম জায়গা ছিল ক্রিকেট, সবার খেলাই ভালো লাগে তবে সাকিব আল হাসান আমার প্রিয় খেলোয়াড়। ক্রিকেট শুধু খেলা নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার একটি শক্তিশালী মাধ্যম। বিশ্বের মাটিতে লাল সবুজের নিশান উড়ানোর অনন্য হাতিয়ার।' এমনটিই বলছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের ক্রিকেটার জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনা। ২০১৮ সালের ৬ই মে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ ঘটে সুমনার। ২০১৮ সালের ২০ মে দক্ষিণ আফ্রিকা মহিলা ক্রিকেট দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে টি-টুয়েন্টিতে অভিষেক করেছিলেন তিনি। জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনা বলেন, ক্রিকেটের শুরুটা নিজ ইচ্ছাতেই, আর উৎসাহ পেয়েছি পরিবারের কাছ থেকে। বাসায় ছোটভাইদের সাথে ক্রিকেটের অনুশীলন করতাম নিয়মিত। সমবয়সী ছেলেদের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলতাম। বাবা আমার জন্য ক্রিকেটের সরঞ্জাম কিনে দিতেন। প্রায় সব খেলাতেই ভালো করতাম, তাই পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বাবা সরকারি চাকুরিজীবি, চাকুরীর সুবাদে জন্ম হয় নীলফামারিতে, তবে সুমনার শৈশব কাটে রংপুরেই। সবাই রংপুরের মেয়ে হিসেবেই চিনেন তাঁকে। সুমনা বলেন, ২০১০ সাল থেকে পেশাদার ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয়। বাসায় বসে বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা দেখা টানতো অনেক। বাংলাদেশের খেলা দেখার জন্য স্কুল ফাঁকি দিতাম, ক্রিকেট খেলার জন্য স্কুল পালিয়েছি অনেকদিন। এরপর বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেসপি) ভর্তি হই, পড়াশোনা আর খেলোয়াড় হিসেবে ওঠে আসা সেখান থেকেই। সবেমাত্র ক্রিকেটের যাত্রাটা শুরু। এখনো অনেকপথ যাওয়ার বাকী, দেশকে এগিয়ে নিতে ক্রিকেটের বহুদূর পথ হাটতে চাই। এই প্রমীলা ক্রিকেটার আরও বলেন, ক্রিকেটের মাধ্যমে জায়গা করে নিতে চাই মানুষের মনে। পড়াশোনা চালিয়ে যাবো, তবে ক্যারিয়ারে ধরে রাখবো ক্রিকেটকেই। পড়াশোনা ও ক্রিকেটের সুবাদে এখন অস্ট্রেয়েলিয়ায় আছেন ব্যাটিংয়ের ডানহাতি ও বোলিংয়ে ডানহাতি অফব্রেক স্পিনার এই উদীয়মান ক্রিকেটার। এ বছর অস্ট্রেলিয়ার ব্যাংকসটাউন স্পোর্টস ওমেন'স ক্রিকেট ক্লাব এর বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। নিশ্চিতভাবেই এক্ষেত্রে তিনি প্রথম বাংলাদেশি। ক্রিকেটে নারীদের সবচেয়ে বড় বাঁধা কী, জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিবার যদি সমর্থন করে তাহলে মেয়েদের ক্রিকেটে আসতে সহজ হয়, তবে মেয়েদের ক্রিকেটের মূল্যটা ছেলেদের ক্রিকেটের তুলনায় কিছুটা কম। পেশা হিসেবে ছেলেদের ক্রিকেটকে যেভাবে দেখা হয় সেভাবে দেখলে প্রমীলা ক্রিকেটের সব বাঁধা দূর হয়ে যাবে। ক্রিকেটের মাধ্যমেই বাংলাদেশকে চিনেছে অনেক রাষ্ট্র। দেশের পরিচিতি ও দেশের সুনাম বয়ে আনতে ক্রিকেটকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে, নারী খেলোয়াড়দের আগ্রহ আরও বাড়াতে হবে। সুমনা বলেন, আমার চোখে এখন বিশ্বজয়ের স্বপ্ন। বাংলাদেশের হয়ে একদিন বিশ্বকাপ জয় করতে চাই। ইত্তেফাক/এসটিএম