essay: Communist Party of China should remember that nothing

essay: Communist Party of China should remember that nothing can happen by force


Anandabazar
সকলই তোমারই ইচ্ছা, পার্টি?
আবাহন দত্ত
০২ জুলাই ২০২১ ০৫:৫০
ওয়ান চাইল্ড নেশন নামে একটা ছবি দেখেছিলাম। ছবির বিষয়, চিনের এক-সন্তান নীতির ভয়াবহতা। ১৯৮০ সালে দেং শিয়াওপিং-এর আমলে একাধিক সন্তান উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল চিনা কমিউনিস্ট পার্টি। অতঃপর সন্তানত্যাগ, গায়ের জোরে নির্বীজকরণ, আট/ন’মাসে গর্ভপাত, জঞ্জালের বালতিতে ভ্রূণ নিক্ষেপ, শিশু পাচার, রাষ্ট্রীয় মদতে অপহরণ, অনথিভুক্ত শিশু খুঁজতে গুপ্তচর নিয়োগ, মিথ্যা গল্পে সাজিয়ে তোলা অনাথাশ্রম। প্রচারযন্ত্রও নামে পুরোদমে; এক-সন্তানে সাজানো সুখী গৃহকোণ আঁকা হত বিলবোর্ড, ম্যুরাল, পোস্টার, পাঠ্যবই, চিলড্রেন কয়ার, অপেরা, লোকনাট্যে। বাস্তবটা, যথারীতি আর একটু কঠিন। গরিব মা বাধ্য হয়ে দ্বিতীয় সন্তানকে পাচারকারীর হাতে তুলে দিতেন; একটিই সন্তান সম্ভব বলে সদ্যোজাত কন্যাকে স্থানীয় বাজারে রেখে আসতেন বাবা, পরের বার ছেলে হওয়ার আশায়; আর মুখে সরকারি নীতির ভূয়সী প্রশংসা: “এই নীতি না হলে চিন আজ নরখাদকের দেশে পরিণত হত।” নানফু ওয়াং আর চিয়ালিং ঝাং— দমননীতির ফাঁকতালে যাঁরা জন্মে গিয়েছিলেন, তাঁরাই এই গল্পটা তুলে ধরেছেন।
দেং যদিও, সম্ভবত, এতটাও খারাপ ভাবেননি। সদ্যসূচিত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি যাতে বাধাপ্রাপ্ত না হয়, সে জন্য জনবিস্ফোরণ (তৎকালে ১০০ কোটি ছুঁইছুঁই) ঠেকাতে চেয়েছিলেন দেং, অতএব পরিবার পরিকল্পনার প্রচেষ্টা। কিন্তু দেশের ক্রমশ বুড়ো হতে বসা অর্থনীতির বৃদ্ধির পক্ষে ভাল কথা নয়, সুতরাং ২০১৬ সালে দুই-সন্তান নীতি প্রণয়ন, এবং সেই আহ্বানে দেশবাসী ততখানি সাড়া না দেওয়ার পর এ বার তিন-সন্তানের বিধান। এখানে আসলে ঘটনাক্রমটাই উল্টে গিয়েছে। অর্থনীতির স্বার্থে জোর করে জনসংখ্যা চেপে দিয়েছিলেন চিনা শাসকেরা, অথচ অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মেই জন্মহার কমে গিয়েছে, এখন চেষ্টা করেও তা বাড়ানো সম্ভব নয়। মাঝখান দিয়ে বেবাক হারিয়ে গিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। জন্ম নিয়ে বা না-নিয়ে।
এখানে আবারও কমিউনিস্টদের একটা শিক্ষা নেওয়ার আছে। গা-জোয়ারি না করার শিক্ষা। তাঁরা যে মোটের উপর মানুষের ভালই চান, এ নিয়ে তেমন সংশয় নেই। তাঁরা বলেন জমির ও শ্রমিকের হাতে কারখানার মালিকানা তুলে দেওয়ার কথা, গণশিক্ষা ও নারীশিক্ষার কথা, ধর্মনিরপেক্ষ আইন প্রতিষ্ঠার কথা, সংস্কারমুক্ত সমাজে সব মানুষের অধিকারের কথা। সমস্যা হল, এ সবই দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ, জোর করে তা হয় না। অধিকাংশ মানুষ যদি কোনও একটা প্রগতিশীল ভাবনা গ্রহণ না করেন, তবে কেন তাঁরা নিজেদের ভাল বুঝছেন না এ নিয়ে আক্ষেপ করা যায়, কিন্তু ধরেবেঁধে পরোপকার হয় না। কারও ভাল চাওয়া যেমন আমার শুভেচ্ছা, তেমনই তা গ্রহণ না করা সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের স্বাধীনতা— গণতন্ত্র এ ভাবেই চলে। সুতরাং মনে রাখা ভাল যে, কোথাও কমিউনিস্টরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হতেই পারেন, চমৎকার কৌশলীও হতে পারেন, তবে তাতে নিজের মত চাপিয়ে দেওয়ার অধিকার জন্মায় না। বৈপ্লবিক চিন্তাভাবনার প্রয়োগেও মানুষকে সঙ্গে নিতে হয়, তার কাছে পৌঁছে তার ভালমন্দ বোঝাতে হয়। ভ্যানগার্ড পার্টি প্রসঙ্গে কিন্তু মার্ক্স-এঙ্গেলসও বলেছিলেন: “...বাস্তবিকই সব দেশে শ্রমিক শ্রেণির পার্টির সবচেয়ে এগিয়ে থাকা ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ অংশ, যারা বাকি সব অংশকে এগিয়ে নিয়ে চলে।” এই সঙ্গে-নিয়ে-চলার নির্যাসটি যারাই বিস্মৃত হয়েছে, তারাই গোলমাল করেছে। বলশেভিক বিপ্লবের মাস কয়েকের মধ্যেই জার্মানি থেকে লেখা চিঠিতে লেনিনের সঙ্গে বিপ্লবের আনন্দ ভাগ করে নিয়েছিলেন জেলবন্দি রোজ়া লুক্সেমবুর্গ; সঙ্গে আসন্ন বিপর্যয়ের ইঙ্গিতও— “সাধারণ নির্বাচন ছাড়া, সংবাদমাধ্যম ও জমায়েতের অবাধ স্বাধীনতা ছাড়া, এবং বহু মতের মুক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া, সমস্ত গণ-প্রতিষ্ঠানই ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়, দাঁড়িয়ে থাকে কঙ্কালটুকু, আর আমলাতন্ত্র তাকে চালনা করে।... রাজনৈতিক স্বাধীনতা ব্যতিরেকে সমাজতন্ত্র হতে পারে না।... শুধুমাত্র সরকারের সক্রিয় সমর্থকদের স্বাধীনতা প্রকৃত স্বাধীনতা নয়।”
Advertisement
Advertisement
চিন বা রাশিয়া বা অন্য কমিউনিস্ট দেশ এই খন্দেই আটকে পড়েছে। চিন বিপ্লবের সাফল্য সন্দেহাতীত, মাও ৎসে তুং তার পরেও বিপ্লবকে ভুলতে বারণ করেছেন, বড় মাপের একাধিক রাজনৈতিক প্রচারও সাজিয়েছেন। ‘শতফুল’ প্রচার, ‘বিরাট উল্লম্ফন’ বা সদর দফতরে কামান দাগার ডাক সেই উদ্যোগেরই অংশ। কিন্তু চিন্তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা সামাজিক নিরীক্ষার ভাবনা প্রক্রিয়াগত ভাবে শাসকের স্বৈরাচারে পর্যবসিত হয়। তাঁরা জানতেন যে, এ সবই মানুষের ভালর জন্য, আর ভাল তো করতেই হবে! অতএব চল্লিশ-পঞ্চাশ জন অত্যুৎসাহী নেতা দেশ চালালেন, সামান্য কয়েক জন শাসন করলেন, মাঝেমধ্যে শ্রমিক শ্রেণির ‘অভিজাত’ অংশকে ডেকে নেতাদের গুণকীর্তন শুনলেন, সেই সুযোগে ‘সর্বসম্মত’ কিছু সিদ্ধান্ত পাশ করিয়ে নিলেন, এবং জনজীবন ক্রমশ নির্জীব হয়ে পড়ল। বিপ্লবী কর্মকাণ্ড হয়ে দাঁড়াল ক্ষুদ্রস্বার্থের অনুশীলন। কোনও সরকার জন্মহার নিয়ন্ত্রণের প্রকল্প নিতেই পারে, ক্ষেত্রবিশেষে নেওয়া দরকারও, কিন্তু সাধারণ মানুষকে না বুঝিয়ে নয়। না হলে পথে-প্রান্তরে এমন বিষাদগাথার জন্ম হয়। আবার একাধিক সন্তানের আহ্বানও প্রয়োজনে বিধেয়, কিন্তু জনমানসের বিশ্বাস অর্জন না করে তা হয় না। ঠকে যেতে হয়।
১ জুলাই শতবর্ষ পালনের সূচনা করল চিনা কমিউনিস্টরা। সেই উপলক্ষে আর্জি: ‘দলকে মেনে চলুন’ এবং ‘ভদ্র আচরণ করুন’। বজ্র আঁটুনির ফাঁক গলে কিঞ্চিৎতম বেসুর শোনা গেলে হয়তো উদ্‌যাপনে হোঁচট থেকে যেতে পারে! ভিন্নমত যে আছে, বিজ্ঞাপনেই তা স্পষ্ট, কিন্তু তাতে অস্বস্তি না পেয়ে, কড়া নির্দেশ না দিয়ে বিকল্প কিছু ভাবা যেত। অধিক সন্তান উৎপাদনেও রাষ্ট্রের তরফে উদ্যোগী হওয়া যেত। বাবা-মা হলে ‌অর্থসাহায্য বা লম্বা ছুটি দেওয়া যায়, ঢেলে সাজানো যায় শিশুস্বাস্থ্যের দফতর। শেষ পর্যন্ত এক-দুই-তিন সবই অবান্তর (এবং ক্ষতিকর) বলে সাব্যস্ত হয়েছে। শতবর্ষেও শত চিন্তার পথ খোলা না গেলে আর কবে যাবে?
Advertisement

Related Keywords

China , Germany , Luxembourg , , China Communist Party , Vanguard Party , One Child Nation , Individuals Independence , Luxembourg City , Free Challenge , சீனா , ஜெர்மனி , லக்ஸம்பர்க் , சீனா கம்யூனிஸ்ட் கட்சி , வான்கார்ட் கட்சி , ஒன்று குழந்தை தேசம் , லக்ஸம்பர்க் நகரம் , இலவசம் சவால் ,

© 2025 Vimarsana