যেভাবে তৈ&#x

যেভাবে তৈরি হলো মহাকাশে বেড়াতে যাবার রকেট-বিমান 'ইউনিটি'


প্রকাশ : ১৩ জুলাই, ২০২১ ০৯:০১
আপডেট : ১৩ জুলাই, ২০২১ ১১:০৮
অনলাইন ভার্সন
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন
যেভাবে তৈরি হলো মহাকাশে বেড়াতে যাবার রকেট-বিমান ‘ইউনিটি’
অনলাইন ডেস্ক
একটি বিমান- যাতে চড়ে আপনি মহাশূন্য ভ্রমণে যেতে পারবেন, মাটি থেকে ৮০ বা ১০০ মাইল ওপরে কয়েক ঘণ্টার জন্য উড়ে বেড়ানোর পর আবার সেই বিমান- ঠিক একটি সাধারণ উড়োজাহাজের মতই- আবার পৃথিবীর বুকে কোনও একটি বিমানবন্দরে এসে নামবে।
সাধারণ বিমান যাত্রার মতই আপনি এই বিশেষ রকেট-বিমানের টিকিট কিনে মহাকাশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা পেতে পারবেন।
দশকের পর দশক এই স্বপ্ন তাড়া করে ফিরেছে কিছু ধনকুবের আর বিজ্ঞানীকে।
সেই স্বপ্ন এখন বাস্তব হবার পথে। কয়েকদিন আগেই ব্রিটিশ ব্যবসায়ী স্যার রিচার্ড ব্র্যানসন তার রকেট-বিমানে করে প্রথমবারের মত মহাশূন্যের প্রান্তে ঘুরে এসেছেন।
আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের মত আরও কয়েকজনও চালাচ্ছেন একই ধরনের মহাকাশযান তৈরির গবেষণা, পরীক্ষা নিরীক্ষা।
‘আমি এটা করেই ছাড়বো’
সেটা ১৯৯০-এর দশকের প্রথমদিকের কথা। বিশ্বখ্যাত এ্যারোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ার বার্ট রুটান নিজেই নিজেকে এক চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন।
চ্যালেঞ্জটা হলো- একটি স্পেস-প্লেন তৈরি করা। এমন একটি বিমান যা মহাকাশ-ভ্রমণে সক্ষম। বলতে পারেন, রকেট-বিমান।
“আমাকে এটা একটা চেষ্টা করে দেখতেই হবে। আমি এটা করবো, করেই ছাড়বো”- এক দশক আগেকার অনুভূতির স্মৃতিচারণ করে ২০০৪ সালে বলছিলেন রুটান।
এই আবিষ্কারের পেছনে তার একটা লক্ষ্যই কাজ করেছিল - সেটা হলো ‘সাধারণ মানুষের জন্য’ মহাকাশ ভ্রমণের সুযোগ খুলে দেওয়া- যে মানুষেরা “নভোচারী” নন।
“গত ২৫ বছরে আমার কাছে মনে হয়েছে, যে শিশুরা স্বপ্ন দেখে যে তারা একদিন মহাশূন্যে যাবে, মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে দেখবে,- আমি নিজেকেও একজন শিশুই মনে করি- তবে তাদের সেই স্বপ্নের সুযোগ ক্রমশ কমে আসছে।”
বার্ট রুটান ভেবেছিলেন, মহাশূন্যে এই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা হতে হবে বিমানে ওড়ার মত।
সাধারণত নভোচারীরা যেভাবে রকেট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশে যান এবং প্যারাশুটে করে পৃথিবীতে ফিরে আসেন- সেই অভিজ্ঞতা সাধারণ মানুষের জন্য অনেক বেশি দুঃসাহসিক বা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে, এটাই মনে হয়েছিল তার।
স্পেসশিপ ওয়ান
এই ভাবনা থেকেই একটা স্পেস-প্লেন বানানোর কাজ শুরু করলেন বার্ট রুটান।
প্রথম তিনি যে যানটি বানালেন তার নাম ছিল স্পেসশিপওয়ান।
১৯৫০ এর দশকে এক্স-১৫ নামে একধরণের পরীক্ষামূলক বিমান উড়িয়েছিলেন টেস্ট পাইলটরা- যা অনেক বেশি উঁচু দিয়ে উড়তে পারে। সেটি থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন রুটান।
অবশেষে ২০০৪ সালের ২১ জুন প্রথমবারের মত ব্যক্তিগত অর্থায়নে তৈরি তার যানটি মহাশূন্যে পৌঁছালো- যা ছিল একটি ঐতিহাসিক মাইলস্টোন।
স্পেসশিপওয়ান নামে সাড়ে আট মিটার লম্বা নভোযানটি ক্যালিফোর্নিয়ার মোজাভে মরুভূমির একটি রানওয়ে থেকে তার উড্ডয়ন শুরু করলো। যানটি আটকানো ছিল হোয়াইট নাইট নামে একটি উড়োজাহাজের নিচে ।
মাটি থেকে ১৪ কিলোমিটার ওপরে ওঠার পর ‘মাদারশিপ’ বা বহনকারী বিমান থেকে বিচ্ছিন্ন হলো স্পেসশিপওয়ান। সাথে সাথে জ্বলে উঠলো তার রকেট ইঞ্জিন।
স্পেসশিপওয়ানের আরোহী ছিলেন একজনই টেস্ট পাইলট মাইক মেলভিল।
স্পেসশিপ ওয়ান এরপর একটা রকেটের মতই খাড়া ওপরের দিকে উঠতে শুরু করলো এবং শেষ পর্যন্ত ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছালো- যাকে আনুষ্ঠানিকভাবে মহাকাশের সীমানা বলে মানা হয়।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসার আগেই যানটির ভেতরে থাকা পাইলট মেলভিল ওজনহীনতা অনুভব করলেন।
ফেরার পথে স্পেসশিপওয়ান তার আকৃতিতে পরিবর্তন আনলো- ঠিক যেভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
এর লক্ষ্য ছিল বাতাসের ঘর্ষণে নভোযানটি যে বাধা বা রেজিস্ট্যান্স পায়- যাকে বৈমানিকদের পরিভাষায় বলা হয় ‘ড্র্যাগ’ - একদিকে তা বাড়িয়ে দেওয়া, আবার পাশাপাশি যানটিকে স্থির রাখা। একে বলা হয় ফেদারিং সিস্টেম।
স্পেসশিপওয়ান এরপর আরও কয়েকটি উড়ান পরিচালনা করে সাফল্যের সাথে। একটি মহাকাশ পর্যটন শিল্প গড়ে তোলার জন্য উদ্যোক্তা পিট ডায়ামান্ডিসের প্রতিষ্ঠিত এক্স-পুরস্কারও পায় এই যানটি।
মহাকাশে বেড়ানোর প্রকল্প ও রিচার্ড ব্র্যানসন
স্পেসশিপওয়ান নামের এই যানটি বহু মানুষের প্রশংসা পাচ্ছিল। তার মধ্যে একজন ছিলেন ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ব্রিটিশ ব্যবসায়ী স্যার রিচার্ড ব্র্যানসন।
অনেকদিন ধরেই এ প্রকল্পের ওপর নজর রাখছিলেন তিনি।
রিচার্ড ব্র্যানসন ঠিক করলেন, মহাকাশযান এবং এর প্রযুক্তির জন্য বড় অংকের বিনিয়োগ করবেন তিনি।
২০০৪ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ঘোষণা করলেন, স্পেসশিপওয়ানের আদলে তৈরি যান ব্যবহার করে তিনি মহাকাশে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু করবেন।
লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে রিচার্ড ব্র্যানসন বললেন- তার নতুন ‘ভার্জিন গ্যালাকটিক স্পেসলাইনে’ একটি আসন পেতে ক্রেতাকে দিতে হবে ২ লাখ ডলার।
ভার্জিন স্পেসশিপের একটি মডেলও দেখালেন তিনি।
বার্ট রুটানকে পাশে নিয়ে ব্র্যানসন বললেন, আগামী বছরগুলোতে হাজার হাজার নভোচারী তৈরি হবে, যারা ওপর থেকে আমাদের পৃথিবীর দৃশ্য, মহাকাশের তারা আর ওজনহীনতার অনুভূতি উপভোগ করার যে স্বপ্ন- তা পূরণ করতে পারবে।
ওই ঘোষণার কিছু পরেই বার্ট রুটান এবং রিচার্ড ব্র্যানসন দ্য স্পেসশিপ কোম্পানি নামে এক কোম্পানি গঠন করলেন - যার হাতে থাকবে ভার্জিন গ্যালাকটিকের মহাকাশ পর্যটন ব্যবসায় ব্যবহার্য প্রযুক্তির মালিকানা- যা তৈরি করবে রুটানের প্রতিষ্ঠান স্কেলড কম্পোজিটস।
সাব-অরবিটাল ফ্লাইট কী?
ভার্জিনের পরিকল্পনা ছিল প্রথম মহাকাশ পর্যটকদের সফরটি হবে ২০০৭ সালে।
কিন্তু রিচার্ড ব্র্যানসন চেয়েছিলেন প্রতিটি ফ্লাইটে থাকবে ৬ জন পর্যটক, এবং দু’জন পাইলট।
এই ভ্রমণ হবে সাব-অরবিটাল, অর্থাৎ বিমানটি মোটামুটি ১০০ কিলোমিটার- উচ্চতায় উঠবে- যেখানে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল শেষ হয়ে মহাকাশ শুরু হচ্ছে ।
সেখানে বিমানটি আরোহীরা কয়েক মিনিটের ওজনহীনতা অনুভব করবেন এবং এরপর তা পৃথিবীতে ফিরে আসবে।
বৈজ্ঞানিক ভাষায় বলা যায়, কোনও মহাকাশযান যদি ঘণ্টায় ১৭,৫০০ মাইল বা তার বেশি গতিতে উড়তে থাকে তাহলে তা মাধ্যাকর্ষণের টান কাটিয়ে মহাকাশেই অবস্থান করতে পারবে এবং পৃথিবীর চার দিকে একটা কক্ষপথ বা অরবিটে ঘুরতে থাকবে।
আর তার গতি যদি এর চেয়ে কম হয়- তাহলে তা মহাকাশের সীমা স্পর্শ করে মাধ্যকর্ষণের টানে আবার পৃথিবীতে ফিরে আসবে- যেভাবে একটা বলকে আকাশে ছুঁড়ে দিলে একটা উচ্চতায় ওঠার পর তা আবার নিচের দিকে নেমে আসে। একেই বলে সাব-অরবিটাল।
স্পেসশিপওয়ানকে আকারে বড় করতে হবে কিন্তু নির্মাতাদের সামনে এখন নতুন কতগুলো চ্যালেঞ্জ উপস্থিত হলো।
আটজন আরোহীর উপযুক্ত যান তৈরি করতে হলে ভার্জিনের রকেট শিপকে হতে হবে আরো বড় আকারের। শুধু তাই নয়, একে বহনকারী বিমান হোয়াইট নাইটেও পরিবর্তন আনতে হবে।
তার ওপর এমন একটি আরও শক্তিশালী রকেট মোটর বানাতে হবে যা এই যানটিকে মহাকাশের প্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারবে।
এর পরের কয়েক বছরে রিচার্ড ব্র্যানসন বেশ কয়েকবার সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরলেন- কেমন হবে স্পেসশিপটু-র কেবিন, জানালাগুলো কেমন হবে, আর তা দিয়ে কিভাবে পৃথিবী ও তারা দেখা যাবে।
তিনি ব্যাখ্যা করলেন, টিকিট-কেনা যাত্রীরা তাদের সিটবেল্ট খুলতে পারবেন, প্রায় শূন্য-মাধ্যাকর্ষণ অবস্থায় তারা ঘুরপাক খেতে পারবেন, ইত্যাদি।
কিন্তু ২০০৭ সালে ঘটে গেল এক দুর্যোগ।
স্পেসশিপটু-র রকেট মোটর পরীক্ষার সময় এক বিস্ফোরণে স্কেলড কম্পোজিটের তিনজন কর্মী নিহত হলেন, আহত হল আরও কয়েকজন।
এরপর মোটর তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হলো সিয়েরা নেভাদা করপোরেশন নামে আরেকটি কোম্পানিকে।
এবার যে রকেট মোটরটি তৈরি হলো- তাতে এইচটিপিবি নামে একটা রাবারভিত্তিক জ্বালানি এবং তরল নাইট্রাস অক্সাইড ব্যবহৃত হলো। একে বলা হলো হাইব্রিড রকেট মোটর।
স্পেসশিপটুর প্রথম যানটির নাম দেয়া হলো ভিএসএস এন্টারপ্রাইজ- যার টেস্টিং শুরু হয় ২০১০ সালে। বহুরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০১৩ সালের এপ্রিলে ভিএসএস এন্টারপ্রাইজের প্রথম শক্তিচালিত উড্ডয়ন হলো।
এতে পাইলট ছিলেন দুজন, মার্ক স্টকি আর মাইক এ্যালসবুরি। মোজাভে মরুভূমির আকাশে এই যানটি শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিতে উড়তে সক্ষম হলো।
কিন্তু এই ইঞ্জিনের কারণে রকেটে যে কম্পন হতো তাতে ভার্জিন গ্যালাকটিক সন্তুষ্ট হতে পারছিল না।
তাই ২০১৪ সালে সিয়েরা নেভাদার সাথে সম্পর্ক শেষ করে রকেট তৈরির কাজ নিজেরাই হাতে নিল ভার্জিন। তারা থার্মোপ্লাস্টিক পলিয়ামাইড নামে একটা ভিন্ন ধরনের জ্বালানি ব্যবহার শুরু করলো।
২০১৪ সালে অক্টোবরে ভিএসএস এন্টারপ্রাইজ তার ৫৫তম পরীক্ষামূলক ফ্লাইট শুরু করলো- যার লক্ষ্য ছিল নতুন জ্বালানি পরীক্ষা করা।
কিন্তু বহনকারী বিমানটি থেকে বিচ্ছিন্ন হবার মাত্র ১১ সেকেণ্ড পরই ভিএসএস এন্টারপ্রাইজ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল, কো-পাইলট মাইক এ্যালসবেরি নিহত হলেন।
পাইলট পিট সাইবল্ড সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তার আসনের সাথে যুক্ত প্যারাশুটে ঝুলতে ঝুলতে মাটিতে নেমে এলেন এবং গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে গেলেন।
এক তদন্তের পর দেখা গেল- যানটির মাটিতে নেমে আসার গতি কমানোর জন্য ফেদার না

Related Keywords

Sierra Nevada , California , United States , United Kingdom , London , City Of , Berte Richard , Stephen Hawking , Neil Virgin , Markr Mike , Jeff Bezos , Virgin Group , Sierra Nevada Corporation , Sir Richard Her , Her Name , Airplane Test , Historic Milestone , California Desert , Her Environmental Start , White Night , Flight Manage , Sir Richard , Her New , Richard The Company , Travel Business , Start Being , Her Report , Airplane White , Blast Composite , April Enterprise , October Enterprise Her , Flight Start , New Energy , State Her , July Sir Richard , Her Unity , Being Sea , Amazon Airplane , Business Sir Richard Single , Her Name New , Builder Blue Origin , சியரா நெவாடா , கலிஃபோர்னியா , ஒன்றுபட்டது மாநிலங்களில் , ஒன்றுபட்டது கிஂக்டம் , லண்டன் , நகரம் ஆஃப் , ஸ்டீபன் ஹாக்கிங் , கன்னி குழு , சியரா நெவாடா நிறுவனம் , அவள் பெயர் , வரலாற்று மைல்கல் , கலிஃபோர்னியா பாலைவனம் , வெள்ளை இரவு , ஐயா ரிச்சர்ட் , அவள் புதியது , பயணம் வணிக , தொடங்கு இருப்பது , ஏப்ரல் நிறுவன , புதியது ஆற்றல் , நிலை அவள் ,

© 2025 Vimarsana